নুরুল আলম সাঈদ,নাইক্ষ্যংছড়ি:
বান্দরবানে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় গ্রেফতার হওয়া আওয়ামীলীগ নেতাদের জামিন দেয়ায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন,জুলাই বিপ্লবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর, স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দায়েরকৃত মামলায় একাধিক আসামিদের জামিন দিয়েছে বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছি আমরা ছাত্র সমাজ।
বুধবার (১৭ অক্টোবর) আসামিরা আদালতে হাজির হলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুদ্দিন তাদের জামিন প্রদান করেন।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় বান্দরবানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
এ সময় তারা বলেন, ছাত্রদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, আর এসময় আসামিদের জামিন দেয়ার বিষয়টি ছাত্র জনতার রক্তের উপর দাঁড়িয়ে স্বৈরাচারের পতাকা উত্তোলনের শামিল।
তারা আরও বলেন, যেখানে উচ্চ আদালতে এসব মামলার আসামিদের জামিনের দরখাস্ত গ্রহণ করেনি, সেখানে বান্দরবানে সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইতিমধ্যে আদালতে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ছাত্র সমাজের মামলার গ্রেফতারদের একাধিক আসামিদেরকে জামিন দিয়েছেন এবং মামলার অন্যান্য আসামিদের অতিদ্রুত জামিন করবেন বলে আদালতে বক্তব্য প্রদান করেন। যা খুবই দুঃখজনক।
তারা বলেন, তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে বাইরে এসে আবারও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করবে এবং বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করবে। তাই আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এছাড়াও আমরা বিচারকের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারক লিপি দেব।
উল্লেখ্য, জুলাই বিপ্লবের পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা হামলার ঘটনায় বান্দরবানে দু’টি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি আবু তৈয়ব চৌধুরী ও মোশারফ হোসেনকে জামিন দিয়েছে আদালত। এবং অপর একটি মামলার আসামি জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুর রহিম চৌধুরীকেও জামিন দেন আদালত।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ পুর্ণগঠন না হওয়ায় জেলা পরিষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে ; আর এতে সাধারণ জনগণ স্বাভাবিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ সময় নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতায় ২৮টি ন্যাস্ত বিভাগ রয়েছে। বর্তমানে বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বর্তমানে পলাতক থাকায় এই বিভাগগুলোর কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে।

এসময় বক্তারা আরো বলেন, প্রশাসনে তৎকালীন ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসকের নিয়োগকৃত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে অধিষ্ঠিত দলীয় দোসররা এখনোও বহাল তবিলতে থাকায় তারা বর্তমান সরকারকে বির্তকিত করতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এসময় নেতৃবৃন্দরা, সাংবাদিকসহ সাধারণ জনগণের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের পাশে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকার আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি আসিফ ইকবাল, মুহাম্মদ মুসা, হাবিব আল মাহমুদ, আশরাফুল ইসলাম, প্রেস ক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হক সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।